Cox’s Bazar Cameraman এর চক্কর – সব হারানোর হাস্যকর কাহিনি | Jahidnote Exclusive

ক্যামেরা ম্যানের চক্করে  ১ম পর্ব

ক্যামেরা ম্যানের চক্করে cox bazar


কখনো ভেবেছো, কক্সবাজারে ছবি তুলতে গিয়ে তোমার বাজেটও “সৈকতের ঢেউয়ের” মতো উড়ে যেতে পারে?
আমি গিয়েছিলাম দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ট্যুর স্পট — Cox’s Bazar, হাতে মোবাইল না থাকায় ভরসা করলাম এক “প্রফেশনাল ক্যামেরাম্যানের” উপর। কিন্তু কে জানত, সেই এক মিনিটের ফটোসেশন আমার ওয়ালেটকে দেউলিয়া বানিয়ে দেবে!

এই ব্লগে আজ জানবে, কিভাবে আমি ১ মিনিটে “৫০০০ টাকার ছবি” তুললাম, কিভাবে কক্সবাজারের ক্যামেরাম্যানরা ট্যুরিস্টদের পকেটের জিপ খুলে দেয়, আর কিছু এমন তথ্য, যা ৯৯.৯৯% মানুষ জানে না কিন্তু সত্য।
তাহলে চল — Jahidnote এর এই হাস্যকর, তথ্যবহুল অভিযানে!

━━━━━━━━━━━━━━━

📸  The 1-Minute Million Photo Scam – এক মিনিটের ৫ হাজার টাকার ছবি

কক্সবাজার সৈকতে নেমেছি, চোখে সানগ্লাস, হাতে নারকেল পানি, মনটা দারুণ ফ্রেশ।
ঠিক তখন এক ভদ্রলোক এগিয়ে এসে হাসিমুখে বলল —
“ভাই, একটা সুন্দর ফটোসেশন করে দেই? মাত্র কয়েকটা ছবি, ভালো কোয়ালিটির ক্যামেরা!”

ভাবলাম, ভালোই তো!
নিজে তো ঠিকঠাক পোজ দিতে পারি না, পেশাদার ক্যামেরাম্যান তো মডেল বানিয়ে ফেলবে!

আমি বললাম, “ঠিক আছে ভাই, কয়েকটা ভালো ছবি তুলেন।”
তিনি বললেন, “চিন্তা নাই ভাই, মিনিটে মিনিমাম দশটা শট পাবেন!”
তখনো জানি না — “মিনিট”টাই হচ্ছে সব থেকে দামি শব্দ!

━━━━━━━━━━━━━━━

🧮  এক মিনিটের ফটোশুট, এক জীবনের আফসোস

ক্যামেরাম্যান পোজ দিতে দিতে এমনভাবে ছবি তুলল, মনে হলো যেন আমি নেটফ্লিক্সের কোনো ট্রাভেল ডকুমেন্টারির হিরো!
সৈকতের বাতাসে চুল উড়ছে, ঢেউ পিছন থেকে আছড়ে পড়ছে, আমি ভাবছি — “এই তো প্রো লেভেল কনটেন্ট Jahidnote এ আপলোড করব!”

মাত্র ৬০ সেকেন্ডেই সে প্রায় ১০০টা ছবি তুলে ফেলল!
এরপর সে বলল,
“ভাই, এখন ৫ হাজার টাকা দেন।”

আমি বললাম, “কি? পাঁচ হাজার! এক মিনিটেই?”
সে হাসল —
“ভাই, আপনি তো অনেক পোজ দিছেন, এখন ছবির পরিমাণেই হিসাব।”

সেই মুহূর্তে বুঝলাম — কক্সবাজারে শুধু ঢেউ না, ক্যামেরার ক্লিকেও মানুষ ডুবে যায়!

━━━━━━━━━━━━━━━

💡 কক্সবাজারের ক্যামেরাম্যানদের অজানা রহস্য

জানো কি?
কক্সবাজারে প্রায় ৭০% ক্যামেরাম্যান কোনো অফিসিয়াল রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই কাজ করে
তাদের অনেকেই “প্রতিটি ক্লিকের” ভিত্তিতে চার্জ করে, কিন্তু পর্যটকরা সেটা জানে না।
তারা সাধারণত DSLR বা Mirrorless ক্যামেরা ব্যবহার করে — কিন্তু অনেক সময় সেই ক্যামেরাগুলোও ভাড়া করা থাকে।

এমনকি অনেকে “অফার প্যাকেজ” দেখিয়ে বেশি দাম নেয়, পরে বলে “এগুলো প্রিমিয়াম এডিটিং সার্ভিসের জন্য”।
তুমি যদি আগেই চুক্তি না করো, তাহলে মিনিটে ৫০০০ টাকাও “স্বাভাবিক” মনে করাতে পারে তারা।

━━━━━━━━━━━━━━━

🌊 আমি হারালাম টাকা, পেলাম শিক্ষা

শেষমেশ ৫০০০ টাকা দিতে হলো, কারণ চারপাশে তার বন্ধুরা, সৈকতের লোক, সবাই “ওই ভাইয়ের সাপোর্টে”।


ভাবলাম, ঠিক আছে — অভিজ্ঞতা তো পাওয়া গেল!
তারপর রাতে হোটেলে বসে দেখি,
১০০ ছবির মধ্যে ৭০টা ছবিতে আমার চোখ বন্ধ!
বাকি ৩০টাতে আমি মনে হচ্ছি “পকেটমারা ধরা পড়া লোক”!

তবে মজার ব্যাপার — সেই ছবিগুলোর কারণে এই আর্টিকেলটা লিখতে পারলাম, আর এখন সেটা Jahidnote এ ভাইরাল হচ্ছে!

━━━━━━━━━━━━━━━

🌴 ৯৯.৯৯% মানুষ যা জানে না

তুমি জানো কি?
কক্সবাজার সৈকতে প্রতিদিন গড়ে ৩০০০+ ক্যামেরাম্যান কাজ করে, এবং
তাদের প্রত্যেকে দিনে গড়ে ১২-১৫ জন ট্যুরিস্টের ছবি তোলে।
মানে, প্রতিদিন শুধু ফটোশুট থেকেই প্রায় ২৫-৩০ লাখ টাকা ঘোরে!
এটা দেশের অনেক জনপ্রিয় রেস্টুরেন্টের দৈনিক ইনকামের চেয়েও বেশি।

আরও অবাক করবে — অনেক ক্যামেরাম্যান AI সফটওয়্যার দিয়ে ফটো এডিট করে, যেখানে মানুষের মুখে “ফিল্টার-স্মাইল” বসানো হয়।
তুমি হয়তো ভাবছো তোমার হাসি ন্যাচারাল, অথচ সেটা “Auto Smile Generator” এডিটেড!

━━━━━━━━━━━━━━━

💬  এখন কী শিখলাম?

এই ঘটনার পর আমি একটা জিনিস বুঝেছি —
ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর আগে দরদামটা ঠিক করা অনেক জরুরি।
না হলে তোমার ছবির হাসিটা যতই সুন্দর হোক, বিল দেখার পর সেটা “ফ্রিজ” হয়ে যাবে!

তাই পরের বার কক্সবাজার গেলে,
প্রথমেই বলো —
“ভাই, আগে রেটটা বলেন, না হলে আমি মোবাইলেই তুলি!”

━━━━━━━━━━━━━━━

🤔 এখন তোমার পালা:

তুমি কি কখনো কক্সবাজার বা অন্য কোথাও এমন কোনো “মজার কিন্তু দুঃখের” ফটোশুট অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছো?
কমেন্টে জানাও, তোমার গল্প Jahidnote এ স্থান পেতে পারে!



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন